
দৌলতপুর মুহসীন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় নারীদের শিক্ষার প্রসার ও সমাজকে আলোকিত করার মহৎ উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৫২ সালে বিশিষ্ট সমাজসেবক ও শিক্ষানুরাগী হাজি মুহাম্মদ মুহসীন এর উদ্যোগে বিদ্যালয়টির আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে এ অঞ্চলের নারী শিক্ষার ইতিহাসে নতুন দিগন্তের সূচনা ঘটে।
হাজি মুহাম্মদ মুহসীন একজন অগ্রণী চিন্তাশীল ব্যক্তিত্ব ছিলেন, যিনি নারী শিক্ষার গুরুত্ব অনুধাবন করে এ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। তাঁর দূরদর্শিতা ও ত্যাগের ফলে দৌলতপুরসহ আশপাশের এলাকার অসংখ্য কন্যাশিশু শিক্ষার সুযোগ লাভ করে। তিনি শুধু বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেই থেমে থাকেননি, বরং এর অগ্রগতি ও উন্নয়নে নিরলস ভূমিকা রেখে গেছেন।
প্রথমদিকে বিদ্যালয়টি অল্প কয়েকজন ছাত্রী ও সীমিত অবকাঠামো নিয়ে কার্যক্রম শুরু করে। শিক্ষকের সংখ্যা ছিল কম, তবে তাঁদের আন্তরিক প্রচেষ্টা, অভিভাবকদের উৎসাহ এবং ছাত্রীদের আগ্রহ বিদ্যালয়কে দ্রুত এগিয়ে নিয়ে যায়। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই বিদ্যালয়টি এলাকাবাসীর আস্থার প্রতীক হয়ে ওঠে।
প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিদ্যালয়টি কেবল পাঠ্যপুস্তকনির্ভর শিক্ষা নয়, বরং নৈতিকতা, শৃঙ্খলা, সৃজনশীলতা, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের উপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে আসছে। সময়ের সাথে সাথে এখানে আধুনিক শ্রেণিকক্ষ, বিজ্ঞানাগার, গ্রন্থাগার ও কম্পিউটার ল্যাব সংযোজন করা হয়েছে, যা ছাত্রীদের মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করছে।
বর্তমানে দৌলতপুর মুহসীন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় এলাকায় নারী শিক্ষার অন্যতম প্রধান কেন্দ্র হিসেবে স্বীকৃত। প্রতিবছর বহু শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় সাফল্যের সাথে উত্তীর্ণ হয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করছে এবং বিভিন্ন পেশায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। বিদ্যালয়টি এখন আধুনিক ও সৃজনশীল শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করে ছাত্রীদেরকে যোগ্য, দেশপ্রেমিক ও বিশ্বমানের নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে।